দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

 দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

যারা দীর্ঘমেয়াদী জ্বর বা হঠাৎ করেই জ্বরে ভোগতাছেন তারা এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হবেন।কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি।জ্বর কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেমন:

1. ভাপ নেওয়া: গরম পানির ভাপ নিলে গলা ও শ্বাসযন্ত্রে আরাম পাওয়া যায়।
2. পানি ও তরল খাওয়া: প্রচুর পরিমাণে পানি, ফলের রস বা স্যুপ পান করুন যাতে শরীরের পানি ঘাটতি পূরণ হয়।
3. কম্বল বা অতিরিক্ত পোশাক পরিধান না করা: 

শীতলতা অনুভব হলে পাতলা কাপড় পরুন এবং ঘর তাজা রাখুন।
4. পানির স্নান: গরম নয়, মৃদু ঠান্ডা পানির স্নান জ্বর কমাতে সহায়ক হতে পারে।
5. আদা-হলুদ চা: আদা ও হলুদ মেশানো চা খেলে শরীরের প্রদাহ কমতে পারে।
যদি জ্বর বেশি দিন স্থায়ী হয় বা অন্য কোনও গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

দ্রুত জ্বর কমানোর ওষধ
জ্বর কমবে মাত্র ২মিনিটেই

জ্বর কমানোর বিশেষ কিছু ঔষধ নিম্নে দেওয়া হলো:

  • 1. প্যারাসিটামল (Paracetamol): এটি সাধারণত জ্বর কমাতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ ব্র্যান্ড নামগুলির মধ্যে রয়েছে প্যারাসিটামল, ট্যায়লোনল, বা সিটামল।
  • 2. আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen): এটি একটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ঔষধ যা জ্বর এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। সাধারণ ব্র্যান্ড নামগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যাডভিল, মট্রিন, বা নুপ্রোফেন।
  • 3. অ্যাসিটামিনোফেন (Acetaminophen):এটি প্যারাসিটামলের অন্যান্য নাম।
ঔষধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডোজ এবং ব্যবহার নির্দেশিকা পড়ুন এবং আপনার স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন। বিশেষত যদি আপনার অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে অথবা শিশুদের জন্য ঔষধ ব্যবহার করছেন।

শিশুর জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
শিশুর জ্বর কমবে মাত্র ২মিনিটেই


শিশুর জ্বর কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় হতে পারে:


শীতল জল দিয়ে স্পঞ্জ করা: শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য নরম কাপড়কে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ভিজিয়ে শরীর মুছুন। খুব ঠাণ্ডা জল ব্যবহার করবেন না, কারণ এটি শীতে অসুস্থতা বাড়াতে পারে।

হালকা পোশাক: শিশুকে হালকা ও শ্বাসপ্রশ্বাসযোগ্য পোশাক পড়াতে পারেন। অতিরিক্ত পোশাক বা কম্বল জ্বর বাড়াতে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পানের ব্যবস্থা করা: জ্বর হলে শিশুর শরীর দ্রুত পানি হারায়। তাই পর্যাপ্ত পানি, স্যুপ বা স্যালাইন পানির ব্যবস্থা করুন।

সুষম খাবার: শিশুকে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার দিন, যেমন স্যুপ, পুডিং, বা ফলের রস।
বাতাস চলাচল: ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখুন এবং ঘরটি ভালোভাবে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন।

যদি জ্বর ৩৮.৫°C (১০১.৩°F) বা তার বেশি থাকে এবং অন্যান্য লক্ষণ যেমন খাদ্যগ্রহণে সমস্যা, অতিরিক্ত ঘাম, বা অস্বস্তি দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জ্বর সর্দি কমানোর ঘরোয়া উপায়
সর্দি-জ্বর দূর হবে মাত্র দশমিনিটেই

জ্বর এবং সর্দি কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায়:

1. হালকা স্যুপ: চিকেন স্যুপ বা ভেজিটেবল স্যুপ খাওয়াতে পারেন। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে এবং গলা শান্ত করতে পারে।

2. গরম পানির বাষ্প: গরম পানির বাষ্প নিলে নাকের ঝিল্লি পরিষ্কার হয় এবং সর্দির লক্ষণ কমতে পারে। গরম পানির বাটি থেকে বাষ্প শ্বাস নিন।

3. সাধারণ পানির সাথে লবণ দিয়ে গার্গল করা: গলা ব্যথা বা গলার অস্বস্তি কমাতে লবণপানি দিয়ে গার্গল করুন।

4. হলুদ দুধ: গরম দুধে একটি চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করুন। হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে কাজ করে।

5. গরম কম্প্রেস: ঠান্ডা বা গরম কম্প্রেস মুলত নাকের পাশে বা গলার উপর রাখলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।

6. মধু এবং লেবুর রস: মধু এবং লেবুর রসের মিশ্রণ গলা শান্ত করতে সাহায্য করে এবং কাশি কমাতে পারে।

7. পানি এবং বিশ্রাম: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং ভালোভাবে বিশ্রাম নিন।

8. জবা পাতা: জবাপাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি-জ্বর উপশম করতে বেশ কার্যকর ভুমিকা রাখে। এটা বাড়ির আশেপাশেই পাওয়া যায়। জবা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা জবা পাতা ভালোভাবে বেঁটে নিয়ে এর সাথে চিনি বা মধুর সংমিশ্রণ করে সেবন করতে পারেন।

9. তুলসি পাতা+গোলাপ পাতার সংমিশ্রণ: সর্দি-জ্বরের সবচেয়ে কার্যকরী এবং মহাঔষধ হচ্ছে তুলসি পাতা এবং গোলাপ পাতার সংমিশ্রণ। এই দুটি পাতার মধ্যে রয়েছে এন্টিসেপ্টিক এবং এন্টিবায়োটিক এর মতো বিশেষ উপাদান, যা সর্দিজনিত জীবাণুর (ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রংকাইটিস, হাঁপনি , শ্বাসকষ্ট) বিরুদ্ধে লড়ায় করতে সক্ষম। এটি জটিল,পুরাতন, নতুন ও সাধারণ সর্দি-জ্বর উপশম করে। এটি সেবনের দশ মিনিটের মধ্যেই আপনি স্বস্তি অনুভব করবেন। বাড়িতেই এটির সংমিশ্রণ তৈরি করা যায়। তুলসি পাতা এবং গোলাপের পাতা বেটে নিয়ে এর সাথে এক গ্লাস হালকা গরম পানি মিশিয়ে সেবন করতে হবে। সেবনের দশ মিনিটের মধ্যেই আপনার সর্দি-জ্বর দূর হবে।

জ্বর কমানোর খাবার

জ্বর কমানোর জন্য কিছু খাবার যা সাহায্য করতে পারে:

  • চিকেন স্যুপ: এটি হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • ফলমূল: যেমন আপেল, কমলা, বা পেয়ারা, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং তরল সরবরাহ করে।
  • সবজি স্যুপ: গাজর, পালং শাক, বা ব্রকোলি দিয়ে তৈরি স্যুপ পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য।
  • দই: দই প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • ভাত ও ডাল: সহজপাচ্য এবং হজমে সহজ, শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে।
  • মধু: গলা শান্ত করতে এবং কাশি কমাতে সহায়ক।
  • পানি ও স্যুপ: প্রচুর পরিমাণে পানি ও স্যুপ পান করা জ্বরের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

এছাড়া, খুব তেল ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।